নাহঃ........সত্যি কথা বলতে গতকাল রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি।বিছানায় যতবার চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছি,তত বারই ব্যার্থ হয়েছি।
চীনারা আমাদের ভূমিতে ঢুকলো, আমাদের কুড়ি জন বীর যোদ্ধাকে হত্যা করল,আবার চলে গেল।বিষয় এটা নয় যে চীনারা কত ক্ষয় ক্ষতি বহন করছে,বিষয় এটা হল যে,কেন আমাদের জওয়ানরা নিহত হলেন?চীনের সাথে সীমান্তে নাকি আমাদের শান্তি পূর্ণ সম্পর্ক,বিগত ৪৫ বছরে একটাও গুলি চলেনি।এসব হল ভাটের কথা।সীমান্ত উত্তেজনা কোন শান্তিপূর্ণ নয়,যখন কারো স্বার্থে আঘাত লাগে,তখন সে তার স্বার্থ রক্ষার্থে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবে।অথচ,গতকাল যখন চীনারা আমাদের অফিসার সহ সাধারণ জওয়ান দের ওপর রড,কাঁটাতার লাগানো ডান্ডা নিয়ে চড়াও হল,তখন সেই তথাকথিত শান্তিপূর্ণ সীমান্ত পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে আমাদের সৈনিকরা নিজেদের আত্মরক্ষার জন্যও আগ্নেয়াস্ত্রঅস্ত্র তুলে নিতে পারেনি।এমনকি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও কোন সৈনিক তার আত্মরক্ষার খাতিরে গুলি চালাতে পারে।অথচ আমাদের সৈনিকরা নিজের ভূখণ্ড, নিজের তিরঙ্গার সম্মান বাঁচাতে এমনকি নিজের জীবন বাঁচাতেও সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার করতে পারছে না।আর এই ভন্ড নিয়ম আমাদের কুড়ি জন যোদ্ধার জীবন কেড়ে নিয়েছে।
চীনের সেনা মরেছে,ভারতের থেকে বেশি মরেছে।তাতে কি?ব্যাপার হল,আমরা আক্রমণ করতে গিয়ে আমাদের সেনা হারাই নি,আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে আর তাতে আমরা সৈন্য হারিয়েছি।চীন তাদের ক্ষয়ক্ষতি কখনোই স্বীকার করবে না।১৯৬৭ সালেও তাদের ৪০০ জন সেনা মৃত্যুর ক্ষতি তারা স্বীকার করে নি।কিন্তু তাতে কি?তাতে তো তাদের দেশে রাজনীতি হবে না।কারন লাল কমিউনিস্ট দানবেরা তাদের দেশ গুলিতে সেই সুযোগই রাখে নি,দ্বিতীয় কোন রাজনৈতিক পার্টি রেখে।অথচ আমাদের দেশে রাজনীতি হবে।মৃত সৈনিকের দেহ নিয়েও রাজনীতি হবে।ভারতের ২০ জন মারা গেছে,ওফফফফ কি ভয়ানক ব্যাপার, সরকার করছেটা কি?চীনের ৪০ জন মারা গেছে,ধুরররররর,এখন নিজেদের গাঁ বাঁচাতে চীনের মৃত্যুর গল্প তৈরী করছে। হাস্যকর ব্যাপার বটে।ভারত-চীন সীমান্তে লড়াই নিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যা হয়েছে,তা ভারতীয় মিডিয়াই বলেছে,চীন এব্যাপারে চুপ রয়েছে।বিশ্বের মিডিয়া ভারতীয় মিডিয়ার সংবাদকেই প্রচার করছে।একই মিডিয়া যখন বলে ভারতের ২০ জন মারা গেছে তখন তা ধ্রুবসত্য, অথচ ঐ মিডিয়ার ই চীনের মৃত্যুর খবরে আমরা সন্দেহ প্রকাশ করি (আমাদের হিপোক্রেসি লেভেল প্রো তে চলে গেছে)।
এবার আসি কিছু ব্যাক্তিগত মতামতে।আমি জানি না আমাদের সরকার এর পরেও চীনের সাথে কিভাবে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখবে।যদি সেটা করতে যায়,তা হবে চরম ভন্ডামি।আমি আমার সরকারের ভন্ডামিতে যুক্ত হব না,কারন ২০ জন যোদ্ধার মৃত্যু আমার কাছে ইয়ার্কি নয়।ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগতে,তবুও আমি আমার নিজের ক্ষমতা অনুসারেই চীনের বিরুদ্ধে লড়ব।কিভাবে লড়ব তাও বলে দিচ্ছি।আমি আজ থেকে এমন কোন ধরনের চীনা দ্রব্য ব্যাবহার করব না,যা সরাসরি চীনকে সিংহভাগ লাভ দেয়।এর শুরুর জন্য আমি আজ সকালে আমার ডেক্সটপ এর কিছু পার্টস খুলে নিয়েছি (যেগুলো চীনা কোম্পানির ছিল)।আমি একটা নতুন ফোন কেনার পরিকল্পনা করছি।মিড রেঞ্জের এই ফোনটি হিসাবে চীনা কোম্পানির ফোন পছন্দ করেছিলাম,যেটিকে হয়তো লক-ডাউন উঠে গেলেই কিনে নিতাম।কিন্তু আমি আমার পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছি।আমি কোন চীনা কোম্পানির ফোন কিনব না।
নাহঃ আমি আপনাদের বয়কট চীনা প্রোডাক্ট এর মতো কোন আন্দোলনে জড়াতে অনুরোধ করছি না।আমি জানি আপনারা তা পারবেন না।কারন চীনা প্রোডাক্টের সামান্য বেশি ফেসিলিটি অথবা একটু কম দাম আপনাকে মোহিত করে দেয়।আপনার ঐ মোহ আপনাকে তখন ভাবতেও দেয় না যে,আপনি চীনের প্রোডাক্ট কিনে চীনকে অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য করছেন।প্রতি বছর চীন ভারত থেকে এভাবেই আপনার মতো সাধারণ ভারতীয়র পকেট থেকে $৬৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যায়।আমি আপনাদের কাছ থেকে কোন অ্যান্টি-চীনা ক্যাম্পেইন অথবা ভারত সরকারের কাছ থেকে কোন পদক্ষেপ আশা করি না।এই লড়াইকে আমি নিজের মনের স্বান্তনার জন্য করছি।কারন আমি হয়তো সীমান্তে গিয়ে আমাদের যোদ্ধাদের পাশে দাড়াতে পারব না,কিন্তু আমার পকেট থেকে যেন একটি টাকাও চীনের কাছে না যায়,তার নিশ্চয়তা করব।আর এটাই আমার দেশের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার একটা সুযোগ।
আপনি দয়া করে চীনের তৈরী সামগ্রী কিনতে থাকুন।শুনেছি MI নাকি দুর্দান্ত ফিচার এর ফোন বের করেছে,যেটি অল্প টাকার মধ্যে দূর্দান্ত।এমাসেই বেরোবে.........সেটি কিনে ফেলুন আর তার পর সেটি দিয়েই স্টাটাস দিন - "চীনের চেয়ারম্যান, আমাদের চেয়ারম্যান"