Nihar Nath 's Album: Wall Photos

Photo 108 of 258 in Wall Photos

ভারত চীন এর সাথে ভাগ করা আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও LAC নীতিমালাতে ব‍্যাপক পরিবর্তন আনতে চলেছে।কি সেই পরিবর্তন তা জানার আগে ভারত-চীন এর মধ্যে ভাগাভাগি করা LAC এর সমরাস্ত্রের আইন সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক।

১৯৬৭ সালের পর থেকে ভারত চীন সীমান্তে কোন বুলেট চলেনি।মূলত সীমান্তে শান্তি ও পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিক্তি গড়ে তোলার জন‍্য প্রথমে ১৯৯৬ সালে পি.ভি নরসীমা রাও এর আমলে এবং তার পর মনমোহন সিং এর আমলে ২০০৫ ও ২০১৩ সালে সীমান্ত নিয়ে চীনের সাথে কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সম্পন্ন হয় ভারতের।আর চুক্তি গুলির অন‍্যতম প্রধান বিষয় হল দুই দেশের মধ্যে LAC তে সমরাস্ত্র ব‍্যাবহার আইন।

এমনটা নয় যে LAC তে দুই দেশের সেনারা অস্ত্র বহন করে না।ভারতীয় সেনাবাহিনীতে রাইফেলকে একজন জ‌ওয়ানের অঙ্গ স্বরূপ দেখা হয়।LAC তেও ভারতীয় বাহিনীর কাছে অস্ত্র থাকে।কিন্তু চুক্তি অনুসারে সেগুলি ব‍্যাবহার করা যায় না।যেহেতু ভারতীয় আর্মি পৃথিবীর অন‍্যতম পেশাদার আর্মি,তাই তারা উভয় দেশের সরকারের মধ্যে হ‌ওয়া চুক্তির পূর্ণ সম্মান দেয় এবং LAC তে অস্ত্রের ব‍্যাবহার করে না।

১৯৯৬ সালে যখন প্রথম চুক্তি হয়,সেই চুক্তিতে বলা হয়েছে :-- ' LAC এর উভয় পাশে অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোন বাহীনিই ফায়ারিং,রাসায়নিক বিস্ফোরণ এবং কোন ধরনের আক্রমনাত্মক কার্যক্রম চালাতে পারবে না।২০০৫ সালের চুক্তিতে বলা হয়েছে :- 'দুই দেশের বাহিনী LAC তে তৈরী হ‌ওয়া যেকোন সমস‍্যা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ‍্যমে মিটিয়ে নেবে এবং সেখানে কোন ধরনের আক্রমনাত্মক ব‍্যাপার থাকবে না'।২০১৩ সালের চুক্তিতে বলা হয়েছে :-- 'কোন পক্ষ‌ই অপরের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক শক্তি ব‍্যাবহার করবে না'।

গত ৬ ই জুন দুপক্ষের মধ্যে হ‌ওয়া বৈঠকে ঐ সব চুক্তি অনুসারেই সমস্ত বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয় এবং উভয় পক্ষই যে যার আগের অবস্থানে ফিরে যেতে সম্মত হয়।গালোয়ান উপত্যকায় চীনারা #PP14 এর অমিমাংসিত জায়গায় নিজেদের তাবু স্থাপনা করে ছিল।৬ ই জুনের আলোচনা অনুসারে সেখান থেকে তাদের চলে যাওয়ার কথা ছিল।কিন্তু ১৫ ই জুন যখন ভারতীয় বিহার রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার তার ত্রিশ জন জ‌ওয়ান কে ঐ স্থানে যান,তখন তিনি ঐ স্থাপনাকে সেখানে দেখতে পান।কমান্ডিং অফিসার ৬ ই জুনের বৈঠকের কথা মনে করিয়ে দিয়ে,সেখান থেকে তাদের তাবু গোটাতে বলে।তখন চীনারা তাতে অসম্মতি জানায় এবং চুক্তি ভঙ্গ করে।এই ঘটনার পর প্রথমে তর্কাতর্কি পরে হাতাহাতি পর্যায়ে পৌছালে,সংখ‍্যায় প্রায় চার পাচ গুন চীনা সেনারা ভারতীয় সেনাদের ওপর পেরেক লাগানো রড,পাথর,লাঠি দিয়ে হামলা চালায়।চীনাদের এই ধরনের হঠাৎ আক্রমণের পর ,ভারতীয় সেনারা গুরুতর আহত হয় এবং কমান্ডিং অফিসার নিহত হন।এই খবর অন‍্যান‍্য ভারতীয় সেনাদের কাছে পৌছালে তারা যখন এসে দেখে তাদের কমান্ডিং অফিসার মারা গেছে,তখন তারা হিংস্র হয়ে যায়।তখন ভারতীয় বাহিনীর পাল্টা আঘাতে অন্তত চল্লিশ জন চীনা মারা যায়,যাদের মধ্যে আঠারো জনের ঘাড় ভেঙে হত‍্যা করে বিহার রেজিমেন্টের ঘাতক কমান্ডোরা।ঘটনায় চীনা সেনারা হতচকিত এবং ছন্নছাড়া হয়ে যায়-ফলস্বরূপ চীনের এক কর্নেল সহ মোট কুড়ি জন সেনাকে ভারতীয় আর্মি আটক করে নিয়ে আসে।

ভারতীয় হলুদ মিডিয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বকে দূর্বলতা ভেবে বসে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোন স্টেটমেন্টের আগেই গুজব ছড়ানো শুরু করে।তারা শুধু ভারতের কুড়ি জনের নিহত হবার কথা ঘোষনা করতে থাকে,আর চীনকে জয়ী হিসাবে দেখাতে থাকে।যাই হোক সেই বিষয়ে যেতে চাইছি না।

যেহেতু চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক‍্যাডার (চীনের কোন আর্মি নেই) ভারতের সাথে করা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে,তাই ভারত সেঈ চুক্তি স্থগিত করতে চলেছে।সূত্র মতে এবার থেকে LAC তে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রয়োজন অনুসারে,তাদের মতো পদক্ষেপ নিতে পারবে।এক্ষেত্রে সরকার কোন বাধা দেবে না।যদি প্রয়োজন হয় গুলি চালানোর তাও চলবে।

বর্তমানে LAC এর পরিস্থিতি কি ? গাল‌ওয়ান উপত্যকায় চীনাদের #PP14 এর অপর পাশে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।তাই যারা ভাবছে গালোয়ান দখল হয়ে গেছে,তারা স্বপ্নদোষে ভুগছে।প‍্যাংগং হ্রদের ফিঙ্গার-৪ এলাকাতে ভারতীয় আর্মি চীনা কমিউনিস্ট ক‍্যাডার দের মুখোমুখি অবস্থান করছে।

তবে কি সব ঝামেলা শেষ?না তা নয়,খেলা সবে শুরু।১৯৬২ এর যুদ্ধের আগে থেকেই চীনারা আকসাই চীন দখল করা শুরু করে।কিন্তু ভারত কোন পদক্ষেপ নেয় নি।১৯৬২ সালের পর ৪৩,০০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা চীনারা অফিসিয়ালি দখল করে।প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেহরু হলেছিলেন -- ঐ স্থানে নাকি একটাও ঘাস হয় না,ঐ জায়গার ভারতের প্রয়োজন নেই।খেলা এখনো তাই বাকি আছে।

#KNIGHT