Gobinda Mistry 's Album: Wall Photos

Photo 18 of 52 in Wall Photos

‘আমাদের পার্টি জাপানকে সাম্রাজ্যবাদী বলে নিন্দা করে। নেতাজী সম্পকে ভুল করে কমিউনিস্টরা একসময়ে ‘কুইসলিং’ অপবাদকে সমর্থন করেছিল।'

‘নেতাজী সম্পর্কে আমরা, কমিউনিস্টরা অতীতে যে-সব কথা বলেছিলাম তা ভুল। আমরা আজ আমাদের সে ভুল স্বীকার করছি।' ~জ্যোতি বসু

-------------------------------------

বিক্ষোভের আগুনে গােটা ভারত তখন জ্বলছে।

লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষের কণ্ঠে সােচ্চার হয়ে উঠেছে একটি মাত্র কামনা—কুইট ইণ্ডিয়া! ইংরেজ ভারত ছাড়!

একমাত্র ব্যতিক্রম কমিউনিস্ট পার্টি। তাদের বক্তব্য—এ যুদ্ধ, জনযুদ্ধ। সুতরাং এ সময়ে একমাত্র কর্তব্য হল ইংরেজকে সহায়তা করা। 'কুইট ইণ্ডিয়া’ ধ্বনি তুলে যারা ইংরেজকে এ দেশছাড়া করার আন্দোলন শুরু করেছে, তারা আসলে দেশদ্রোহী ছাড়া আর কিছুই নয়।

কমিউনিস্ট পার্টির তৈরী দেশদ্রোহীদের তালিকায় স্থান পেয়েছিল সুভাষের ফরােয়ার্ড ব্লক, সি. এস. পি., ট্ৰটস্কীপন্থী ইত্যাদি। লক্ষ্য করুন, তালিকায় কংগ্রেসের কোন নাম নেই।

-------------------------------------

নেতাজী বিরোধীতা প্রসঙ্গে বরেণ্য ঐতিহাসিক ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার কি বলেছেন শােনা যাকঃ

'Batlivala added that Joshi had, as General Secretary of the Party, written a letter in which he offered 'unconditional help' to the then Government of India and the Army G. H. Q. to fight the 1942 underground work and the Azad Hind Fouz (I. N. A.) of Subhas Chandra Bose, even to the point of getting them arrested.

(বাটলিওয়ালা* আরও বলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জোশী তৎকালীন ভারত সরকারকে "Unconditional Help" দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং আর্মি জেনারেলকে আজাদ হিন্দ ফৌজের কাজকর্ম সম্পর্কে লড়াই করায়, এমনকি সুভাষ চন্দ্র বসুকে গ্রেপ্তারের জন্য সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।)

These men were characterised by Joshi in his letter as ‘traitors and fifth columnists', Joshi's letter also revealed that C. P. I was receiving financial aid from the Government, had a secret pact with Muslim League, and was undermining Congress activity in various ways.'

(জোশী চিঠিতে এই লোকদের বিশ্বাসঘাতক বলে আখ্যা দেন। জোশির চিঠি থেকে এও বোঝা যায় সিপিআই সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে এবং মুSলিম লীগের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া করে কংগ্রেসের কাজকর্মে নানা বাধা তৈরি করছে।)

*উল্লিখিত বাটলিওয়ালা পার্টির প্রাক্তন সদস্য। ১৭/৩/৪৬ তারিখে 'বম্বে ক্রনিকেল’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর কয়েকটি চিঠি।

[History of Freedom Movement : Vol.III]

-------------------------------------

এ ছাড়াও নেতাজীর বিরুদ্ধে নানান কুৎসা ছড়ানো হয় বামপন্থী পার্টির মুখপত্র পিপলস ওয়ার থেকে। বিশ্বাসঘাতক, তেজোর কুকুর থেকে শুরু করে নানা জঘন্য কার্টুন, নেতাজীকে নিয়ে কুৎসা তখন বামপন্থী এলিটদের কাছে মেইনস্ট্রিম হয়ে গিয়েছিল।

----------------------------------

অবশ্য কমিউনিস্টদের নেতাজী বিরোধিতার একটা সম্ভাব্য কারণ বুঝতে পারা যায় কমিউনিস্টদের নেতা কমরেড মুজাফফর আহমেদের লেখা "আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি" বইটি থেকে। নেতাজী প্রকাশ্যেই স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা না করেই মার্ক্সবাদের তীব্র সমালোচনা করতেন।

" ...সুভাষ বসু বার্মার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে আসা অবধি স্থান-অস্থান বিবেচনা না করেই মার্কসবাদকে গালি বর্ষণ করে যাচ্ছিলেন। যাঁর বক্তৃতা অসহ্য হয়ে ওঠায় একদিন বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভায় আমি তাঁকে তর্কযুদ্ধে আহ্বান পর্যন্ত করেছিলেম।

কিন্তু ঘৃণাভরে বা অহংকারভরে কিংবা ঘৃণা ও অহংকার দু' কারণেই তিনি আমার আহ্বানে সাড়া দেননি।" ("আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি", মুজাফফর আহমেদ)

----------------------------------------------------

অনেক পরে জ্যোতি বসু বামপন্থীদের এইসব কাজের জন্য প্রকাশ্যে "ভুল স্বীকার" করেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।

কিন্তু, সেই ভুল স্বীকার করাটা কতটা মন থেকে বা কতটা অভিনয়? যদি সত্যিই মন থেকে বামপন্থীরা নেতাজীকে নিয়ে করা কুৎসার জন্য অনুতপ্ত হতেন, তবে কি আজ ২০২০ সালেও নেতাজীকে নিয়ে বামপন্থীদের কুৎসা অব্যাহত থাকতো?

নেতাজীকে "ভোট রিগিং"-এর প্রবক্তা বানাতে চেয়ে বামপন্থীরা সত্যিই সেই পি সি জোশীদের ট্র্যাডিশন অক্ষুন্ন রেখেছেন।