Subhankar Bakuli 's Album: Wall Photos

Photo 68 of 259 in Wall Photos

জগন্নাথের অসুস্থ লীলা’’

জগন্নাথের স্নানযাত্রার পর মন্দির পনরো দিন পর্যন্ত বন্ধ থাকে। জগন্নাথের জ্বর হয়।
পনরো দিন পর মন্দির খোলা হয়।
নয়নকল উৎসবে নয়ন খুলবে। জগন্নাথকে সাজানো হয়। শ্রীক্ষেত্র পুরী হল মর্ত্যের বৈকুন্ঠ, দ্বারকা। পুরী মন্দিরের চারটা দরজা। অশ্ব,হস্তি, ব্যাঘ্র, সিংহ। অশ্ব-অর্থ, হস্তি-মোক্ষ,ব্যাঘ্র-কাম, সিংহ-ধর্ম। জগন্নাথ সিংহ দরজা দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করে। মহাপ্রভুও এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেন জগন্নাথ দর্শনে। হস্তি দরজা দিয়ে জগন্নাথ বের হয় সমাধিতে যাওয়ার জন্য। দরজা বন্ধ থাকে সবসময়। শুধু জগন্নাথ সমাধিতে যায় এই দরজা দিয়ে। একবার দেবকী, বাসুদেবের বাসনা হল তীর্থ স্নান করবে। বলরাম কৃষ্ণ বললেন দেবকী বাসুদেবকে। কুরুক্ষেত্রে অমাবস্যায় সূর্যগ্রহনের স্নান করলে মোক্ষ লাভ হয়। কুরুক্ষেত্রে একুশবার ক্ষত্রিয়দের বিনাশ করেছিল। তাদের রক্ত থেকে এই সরোবর। আবার পরশুরাম ওখানে তর্পন করে ঐ ক্ষত্রিয়দের। ঐ সরোবর পূর্ণ তীর্থে পরিনত হয়। ঐখানে সবাইকে নিয়ে আসেছেন দ্বারকাদীশ শ্রীকৃষ্ণ। মা দেবকী, বাসুদেব, সঙ্গে সুভদ্রা মাতা, কৃষ্ণের আট জন মহাপটরানী, সঙ্গে বলরাম তার সাথে বারূণী, রেবতী যাচ্ছেন। অনেক সৈন্য, অনেক বাদ্যযন্ত্র বাজছে। নারদজী ভাবছেন, শ্রীকৃষ্ণ আসেছেন কুরুক্ষেত্রে এই কথা ব্রজবাসীদের বলতে হবে। নারদজী বীনায় কৃষ্ণ নাম করতে করতে চললেন ব্রজে। একমাসের বেশীসময় কৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রে থাকবে এই খবর দিতে চললেন নারদজী ব্রজে। ব্রজে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে অঙ্গে জ্বলতে লাগল। যোগ ধ্যানে বসলেন নারদজী কেন তার অঙ্গ জ্বলছে। বিরহ তাপে অঙ্গ জ্বলছে ব্রজধামের, যমুনার,স্থাবর-জঙ্গম, গোবৎস, গাভী, গোপ গোপী,মা যশোদা নন্দবাবা। কৃষ্ণবিরহে সবাই কাঁদছে। নারদজী দেখলেন ব্রজে নন্দালয়ে যশোদা ননী নিয়ে গোপাল গোপাল করে কাঁদছে। শ্রীদাম পটে আঁকা কৃষ্ণের ছবি দেখে কেঁদে কেঁদে বলছে, কানাইয়া দেখ মিষ্টি ফল আনেছি। এটো ফল দিই নি রে। এটো ফল দিলাম বলে তুই আমাকে ছেড়ে চলে গেলি এই বলে কাঁদতে লাগল। এদিকে রাধা কাঁদে সখীদের গলা ধরে। নারদজী বললেন তোমাদের নয়নাভিরাম কুরুক্ষেত্রে। চল তোমরা দর্শন করবে তোমাদের প্রাণ গোবিন্দকে। রাধাকে বলল ললিতা চল সখী তোকে সাজিয়ে দিই। রাধারাণী বলল আমি সেজে বসে আছি। নয়ন সেজেছে শ্যামের রূপ দর্শনে, হাত সেজেছে শ্যামের পদসেবনে,কানের ভূষন আমার শ্যামের নাম শ্রবন। সবাই চল কুরুক্ষেত্রে। বিরহিনী গোপীরা এক কুঞ্জে শ্যাম আছে শুনে দর্শনে ব্যাকুলতা নিয়ে গেল। দেখল যে বনমালী, যে গোপালকে ওরা ভালবাসত সে কৃষ্ণ নয়। কোথায় বনমালা কোথায় চুড়া। এ রাজার বেশে কৃষ্ণকে ভালবাসে না ওরা। দেখা না করে চলল রাধা। যোগমায়া দেখলেন রাধারানী কৃষ্ণ দর্শন না করে চলে যাচ্ছেন। কৃষ্ণকে বলল রাধারানী চলে গেছে শুনে শ্যামের মনে বিরহ হল রাধা বিরহ। এদিকে যোগমায়া অপূর্ব কুঞ্জ রচনা করলেন রাধা আর প্রিয় সখীদের জন্য। কৃষ্ণ আসবেন রাধার সেই অপূর্ব কুঞ্জে। কিন্তু এর জন্য রুক্মণীকে মানে লক্ষীকে রাজি করাতে হবে। রুক্মনী তো রাজি হয় না কিছু তো। কিছুতে যেতে দেবে না তাকে। এই নিয়ে দুইজনের রাগ। তাইতো রাগ করে লক্ষী রান্না করে না। তখন কৃষ্ণ বলে আমার দাদা বলরাম কি দোষ করল,ও কেন না খেয়ে থাকবে। তাই শুধু পাচন রান্না করেন। কুরুক্ষেত্রে এই স্নান এল জগন্নাথের স্নান যাত্রা। এই যোগমায়ার কুঞ্জ হল গন্ডিচা মন্দির। যা যোগমায়া তৈরি করলেন।
জগন্নাথের জ্বর হল রাধার বিরহ জ্বর হল। জগন্নাথ যাবে রথে করে ভক্ত দর্শনে। রাধার কুঞ্জে গন্ডিচা মন্দিরে যাবে রথে করে। কিন্তু লক্ষী যেতে দেবে না। জগন্নাথের সাথে বলরাম সঙ্গে সুভ্দ্রা তাতে রাজি হলেন মা লক্ষী। তাই রথে আগে বলরাম, পরে সুভদ্রা তারপর জগন্নাথ।

জয় জগন্নাথ……