tarun malakar's Album: Wall Photos

Photo 147 of 265 in Wall Photos

ভারত কোনো মুসলিম উম্মাদদের টাইম দেয় না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন স্বপরিবারে হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন জার্মানিতে।এই নৃশংস ঘটনার পর সারা পৃথিবীতে তখন কেউ তাদের একটু আশ্রয় দিতে সাহস করেনি।শেষ পর্যন্ত ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শেখ হাসিনাকে ভারতে নিয়ে এসে আশ্রয় দিয়েছিলেন।ভারতে থেকেই তিনি আস্তে আস্তে দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৮১ সনের ১৭মে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।ভারতে থাকাকালীন তিনি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখার্জির তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

যে কারণে পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্ক খারাপ ঠিক প্রায় একই কারনে বাংলাদেশের সাথেও ভারতের সম্পর্ক খারাপ।কারন ভারত বিদ্বেষী মনোভাব কোন সময়ই পাকিস্তান বা বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মন থেকে মুছে ফেলা যায়নি।মুক্তিযুদ্ধের সময়টা মনে হতে পারে একটি ব্যতিক্রম।কিন্তু আসলে তা নয়।সেই সময়টায় বোঝা না গেলেও এখন পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে অতীতে মোগল আমলে মুসলিম শাসনের পট পরিবর্তন যে কায়দায় হত, বাপ ছেলেকে হত্যা করে সিংহাসন দখল বা ছেলে বাপের মাথা কেটে সিংহাসন দখলের ইতিহাস ইসলামের ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি ছিল সেই সময়ের মুক্তিযুদ্ধ।ভারতীয় বাহিনী ছিল কেবলই একটি ভাড়াটিয়া বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ৪ হাজারের বেশী সেনাবাহিনীর জওয়ান মারা গিয়েছিলেন।কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপে বিষয় তাদের উদ্দেশ্যে সারা বাংলাদেশ জুড়ে একটিও স্মৃতি সৌধ খুঁজে পাবেন না।যে নেত্রীর চাতুর্য্যে সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, ট্রেনিং দিয়ে, রসদ জুগিয়ে, ১ কোটি শরনার্থীদের ভরনপোষণ করে সর্বশেষ নিজের সেনাবাহিনী কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে একটি নুতন দেশ উপহার দিয়েছিলেন। সেই নেত্রীর কোন স্মৃতি বাংলাদেশে নেই।সোহরাওয়ার্দি উদ্দানে ইন্দিরা গান্ধীর নামে একটি মঞ্চ ছিল, বিদ্বেষের রোশানলে পড়ে সেই ইন্দিরা মঞ্চটিও উধাও হয়ে গিয়েছে।এই অকৃতজ্ঞতার নজির সারা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। নইলে এত রক্ত, এত ত্যাগ তিতিক্ষার পরেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ চেতনা টিকিয়ে রাখা গেল না কেন?

মুক্তিযুদ্ধ সাময়িক জাতিকে ভুলিয়ে রেখেছিল ভারত বিদ্বেষ।নতুন দেশ নতুন পতাকা নতুন জাতীয় সঙ্গীত পাওয়ার উত্তেজনায় আমরা সবাই আবেগ উচ্ছাসের জোয়ারে ভাসছিলাম।কিন্তু খুব একটা বেশী সময় লাগেনি এই ঘোর কাটতে।ধীরে ধীরে জেগেছে তৌহিদি জনতা পুরনো দাবি নিয়ে।জাতি বিদ্বেষকে শিখন্ডি করে একে একে মুক্তিযুদ্ধের সব আদর্শ চেতনা হারিয়ে গেল ইসলামের শানিত তলোয়ারের নীচে।দেশের বাস্তবতা মানতে হবে।দেশের সিংহভাগ মানুষের অনুভূতিকে গুরুত্ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আত্মসমর্পণ করে প্রমাণ করেছে কোন মুসলিমই ইসলাম ধর্মের উর্ধে নয়।যে শেখ হাসিনা মা-বাবা-ভাই আত্মীয় স্বজনসহ সর্বস্ব হারিয়ে দেশে এসেছিলেন তিনিও ভুলে গেলেন অতীত।চেষ্টা করেছিলেন বাপের আদর্শ টিকিয়ে রাখতে কিন্তু পারেননি।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় ভাবে শক্তির ভারসাম্য এবং ভৌগোলিক কারনে ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।এছাড়া বন্ধুত্ব সম্প্রীতি পরধর্ম সহনশীলতা বৈষমহীন সমাজ ব্যবস্থা এসব শুধু প্রচারেই সীমাবদ্ধ।বাস্তবে বাংলাদেশে এসবের কোন অস্তিত্ব নেই।কল্পনায় আঁকা হয় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির কথা।প্রকৃতপক্ষে ইসলাম ধর্মই সকল মুসলমানকে এক অখন্ড ঐক্যসূত্রে বেধে রেখেছে।ইসলাম ধর্মই সকল মুসলমানের অনুপ্রেরণার মূল উৎস।হাজার বছর ধরে এই উপমহাদেশে মুসলমানরা বাস করেও তাদের স্বাতন্ত্র হারায়নি।সকল জাতিই নিজ নিজ ধর্মে বিশ্বাস করে কিন্তু ব্যতিক্রম মুসলিমরা।তারা শুধু বিশ্বাসই করে না তাদের রাষ্ট্রীয় নীতিও ধর্মের অভিন্ন সূত্রে গাথা।তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন মদিনা সনদ অনুসারে দেশ পরিচালিত হবে।

গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল।কত মায়ের বুক খালি হয়েছিল, কত নারী তার সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন, কত পরিবার সর্বশান্ত হয়েছে এই স্বাধীনতার জন্য আর আজ সব চাপা পড়ে গিয়েছে ভারত বিদ্বেষের রোষানলে।কত আশা ছিল দেশটি হবে অসাম্প্রদায়িক আর হল সাম্প্রদায়িক একটি দেশ যার রাষ্ট্র ধর্ম হল ইসলাম।যারা প্রবীণ তারা মনে করে দেখেন এই বাংলা মুজিবের বাংলা নয় এ বাংলা জীবনানন্দ দাসের বাংলা নয় এ বাংলা নজরুলের বাংলা নয়।এ বাংলা ইসলামের বাংলা এ বাংলা জাতি বিদ্বেষীদের বাংলা এ বাংলার জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি।যারা ভাবছেন গোটা পৃথিবীতে আমরা সবাই পাশাপাশি শান্তিতে থাকব হিন্দু মুসলিম আমরা সবাই ভাই ভাই।দাঙ্গা হবে না লাশ পড়বে না।কারন অন্তত মুসলিম ধর্মের বিধান মতে সারা পৃথিবীতে অন্যকোনো ধর্মের লোক তাদের ভাই হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা।এমনকি মুসলিমদের মধ্যেও শিয়ারা সুন্নিদের সুন্নিরা শিয়াদের কোপাচ্ছে।সেখানে সনাতনীরা তো কোন ছার।

বাংলাদেশে যে ভারত বিদ্বেষী মনোভাব চরম আকার ধারণ করবে তা আঁচ করা যাচ্ছিল ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই।এতদিন যারা ভারতের ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সাথে বর্তমান বিজেপি সরকারের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।যে কারনে ভারত বিদ্বেষ বর্তমান বিজেপি সরকার তার মূলে হাত দিয়েছে যা এতদিন ভারতের অন্যকোন সরকার হস্তক্ষেপ করেনি।বিগত সরকারগুলো মুসলিম তোষণ করে দেশকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল যে, ভারত যে একটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র তার অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছিল।যারজন্য বিজেপি সরকার বাধ্য হয়ে এমন কতগুলো কড়া পদক্ষেপ নেয় যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ তো বটেই সারা পৃথিবীর মুসলিম জাহান আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।প্রথমে বিজেপি কাশ্মীরে- ৩৭০ ধারা এবং ৩ তালাক বাতিল করে তারপর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করে মুসলিম জাহানের গালে একটি থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।নাগরিকত্ব আইনে প্রতিবেশী দেশ থেকে নির্যাতন, নিপীড়ন এবং ধর্মান্তকরনের স্বীকার হয়ে যে সমস্ত সংখ্যালঘু হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান জৈন এবং শিখেরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ নাখুশ হয়।মুসলিমদের বাদ দিয়ে কেন এই নাগরিকত্ব।যেভাবে অবৈধ বাংলাদেশী মুসলিমরা ভারতে অবস্থান করছিল তাতে ভারতের ভূ-প্রকৃতি বদল হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছিল।আর এই আইন পাশ হওয়াতে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীরা।সারা পৃথিবীর কোন মুসলিম কান্ট্রিতে অবৈধভাবে একটি লোকও বসবাস করতে পারেনা।কিন্তু ভারত তার দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের থাকতে দিতে হবে।ভারত সেটি মানেনি।এতে শুধু বাংলাদেশ নয় সারা পৃথিবীর মুমিনদের মাথায় বাজ পড়েছে।ভারতের এই সরকার নিজেদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কারো রক্ত চক্ষুকে পরোয়া করে না বলেই মোদি সারা পৃথিবীর মুমিনদের কাছে এত চক্ষুশূল।ভারত বিদ্বেষের দ্বিতীয় কারনটি ছিল দেশভাগের পরে এই প্রথম ভারতীয় সংসদে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি হত্যা,ধর্মান্তকরন,পুড়িয়ে মারার মতো কিছু নৃশংস ঘটনার তালিকা তুলে ধরা হয়েছিল।এতে বাংলাদেশ সরকার বেকায়দায় পড়েছিল। ভারতের ধর্মশালা হয়ে থাকতে হবে এই নীতি থেকে ভারত সরে এসেছে।এতে প্রতিবেশীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং আতঙ্কে ভারত বিদ্বেষ কয়েক গুন বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু ভারত তার অভীষ্ট লক্ষে অবিচল।

সংগৃহীত পোস্ট