অহং ব্রহ্মাস্মি
--------------------
আমাদের ধর্মগ্রন্থ ঋষিগন সংস্কৃত ভাষায় লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। ঋষিগন যোগের চরম সীমায় উপনীত হইয়া, যোগ সাধন বিধি রুপকের মাধ্যমে তাহাদের প্রণিত গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। ঋষিগনের শাস্ত্র মারাঠী, বাঙালা প্রভৃতি উপভাষায় অনুবাদিত হইয়াছে ; ঋষিগনের শাস্ত্র যাহারা উপভাষায় অনুবাদ করিয়াছেন, তাহাদের প্রায় কেহই যোগ পথের অনুসারী নহেন ; কাজেই কল্পনা করিয়া করিয়া তাহারা কোনো গতিকে অনুবাদ করিয়াছেন। এবং এ-ই সকল অনুবাদ পড়িয়া আমরা ভাবিতেছি যে, আমরা শাস্ত্র পাঠ করিয়াছি ; সংস্কৃত ভাষা ও যোগ -- এই উভয় পদে যুক্ত থাকিয়া ঋষিশাস্ত্রের অনুবাদ করিলে, কিঞ্চিৎ পরিমানে ঋষি শাস্ত্র বুঝিতে পারা যাইত।
স্বাধ্যায় হইল ধর্মাচরণের এক অপরিহার্য অংশ। সাধারণ অর্থে, স্বাধ্যায় বলিতে গ্রন্থ পাঠ করাকে বোঝায়। গ্রন্থের অনুবাদ পাঠকে স্বাধ্যায় বলা হয় নি। গ্রন্থ পাঠ করিয়া গ্রন্থের তাৎপর্য অবগত হইতে হয়। গ্রন্থ বুঝিতে গেলে যোগী ও সংস্কৃতজ্ঞ হইতে হয়। বর্তমানে গ্রন্থাদির অনুবাদক বাহির হওয়ায় লোকে কষ্ট করিয়া গ্রন্থ পাঠ করে না ; শুধু অনুবাদ মাত্র পাঠ করিয়া থাকে এবং ঐ অনুবাদ পাঠ করিয়াই বলিয়া বেড়ায় যে, আমি নিত্য গীতা পাঠ করিয়া থাকি। যাহা হউক, যাহারা গীতা পাঠ করিতে চাও, তাহারা নিম্নলিখিত গ্রন্থাদি পাঠ করিয়া সংস্কৃত শিখিবার পর গীতা বা অন্যান্য গ্রন্থ পাঠ করিও এবং অনুবাদ গ্রন্থ সমূহকে ঘর হইতে বহিষ্কার করিও। গ্রন্থ সমুহঃ
১।সিদ্ধান্ত কৌমুদী
২। সংক্ষিপ্তসার
৩। মুগ্ধবোধ
৪।প্রৌঢ় মনোরমা
৫।কাশিকা
৬। পদমঞ্জরী
৭। ন্যাস
৮। অলঙ্কার সূত্রবৃত্তি
৯। পরিভাষেন্দুশেখর
১০। লঘু শব্দেন্দুশেখর
১১। পতঞ্জলির মহাভাষ্য
১২। গণ দর্পণ
১৩। ধাতুরূপ কল্পদ্রুম।
ইতি
আচার্য পণ্ডিত অনিতা দেবশর্মা তর্করত্ন