partha pratim's Album: Wall Photos

Photo 4 of 5 in Wall Photos

#sourav_ganguly_who_change_the_face_of_indian_cricket_

প্রথম পছন্দ ছিলো ফুটবল।বাবা মা কোনোদিনই চাননি ছেলে খেলোয়ার হোক।স্কুলজীবনে হঠাৎই দাদা স্নেহাশীষের প্রভাবে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে।স্নেহাশীষ গাঙ্গুলির তৎপরতায় দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় গরমের ছুটি থাকাকালীন ক্রিকেট একাডেমি তে ভর্তি হন।ডানহাতি ব্যাটসম্যান হওয়া সত্বেও দাদার কিট ব্যাবহারের জন্য বাঁহাতে প্রাকটিস শুরু করেন।এশিয়া তথা বিশ্ব পেয়ে গেলো ক্রিকেটের ইতিহাসে একজন অন্যতম বামহাতি ব্যাটসম্যান।

1992 এ একদিনের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডাক পেলেন জাতীয় টীমে।প্রথম ম্যাচে করলেন ৩ রান।একটিমাত্র ম্যাচে সুযোগ তারপরেই টিম থেকে বাদ ।

1992 সালে সৌরভ যখন ভারতীয় দলে প্রথম নির্বাচিত হন তখন তার নামে শ্রীকান্ত , শাস্ত্রী সহ বেশ কিছু প্লেয়ার অভিযোগ করেছিলেন সৌরভ নাকি উদ্ধত এবং তাদেরকে সিনিয়র ক্রিকেটার হিসাবে সম্মান করেন না ।এটাও শোনা যায় গাঙ্গুলি নাকি মাঠে প্লেয়ারদের জন্য ড্রিঙ্কস নিয়ে যেতে চাননি। যেটা সৌরভ পরে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ বলেছিলেন।

১৯৯৩,১৯৯৪-১৯৯৫ এ ডোমেস্টিক ক্রিকেটে দূর্দান্ত পারফরম্যান্স,১৯৯৫ এ দলীপ ট্রফিতে ১৭১ রান।এসবের জন্য গাঙ্গুলিকে আর দমিয়ে রাখা যায়নি।আবার ডাক পেলেন ১৯৯৬ এ ইংল্যান্ড সিরিজ এ।

1996 এর বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের খারাপ পারফরম্যান্স, ইডেনে সেমিফাইনালে লজ্জাজনক হারের বিতর্ক, আজাহার-সংগীত বিজলানী কেচ্ছা সবকিছুই একটা অনুঘটকের কাজ করেছিল । ইংল্যাণ্ডের দল ঘোষণা হওয়ার পরে সৌরভকে নিয়ে প্রথম বিদ্রুপটা ছুঁড়ে দিয়েছিলেন গাভাস্কার - " ও তো কলকাত্তা কা রসগুল্লা হ্যায় ! " রবি শাস্ত্রী সরাসরিই বলেছিলেন - " কোটার মাল !"।।

এখানেই শেষ নয়, ডেবিউ টেস্ট এ লর্ডসের স্যাঁতস্যাঁতে পিচে সৌরভকে ওয়ান ডাউনে ঠেলে দেন পাতিল আজাহার জুটি । উদ্দেশ্য পরিষ্কার। লর্ডসে সৌরভ কি করেছিলেন সেটা বিশ্বক্রিকেটের রূপকথায় ঢুকে গেছে ।ডেবিউ ম্যাচেই শতরান ।

প্রথমের দিকে আবার বলা হোত ক্রিকেটই খেলতে পারেন না , লর্ডসের পরে নতুন গান শুরু হল টেস্টে মোটামুটি চললেও ওয়ানডে এর দ্বারা হবে না । পরে দশ হাজার রান পূর্ন করে সংবাদিকদের বলেছিলেন - " জীবনের প্রথম ওয়ানডে রানটা করার পরে জানতাম না পরের ম্যাচে দলে থাকবো কিনা ! আজ দশ হাজার ওয়ানডে রান করার পরেও জানিনা পরের ম্যাচে জায়গা থাকবে কিনা । "

আবার নতুন অভিযোগ সৌরভ নাকি জোরে বল খেলতে পারে না ! আঠেরো হাজার রান শুধুই স্পিনের বিরুদ্ধে এসেছে ? অফ সাইডের স্কোয়ার কাট আর কভার ড্রাইভ সর্বকালের সেরা । হিংসুকরা বলতো অন সাইডে খেলতে পারেন না । কতবড় নির্বোধ হলে এই কথাকে সমর্থন করা যায় । এতবড় দুর্বলতা নিয়ে 12 বছর এই আকাশছোঁয়া সাফল্য নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সম্ভব !

2000 এ টিম যখন ফিক্সিং এর খোঁচা তে বিধ্বস্ত , গোটা দেশের মানুষের ভারতীয় ক্রিকেট এর উপর আস্থা উঠে যেতে বসেছে ঠিক তখন ই নতুন অবতার হয়ে টিমের অধিনায়কত্বের ভার কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন । টিমে তখন প্রায় সবই নতুন মুখ ।

ঘরোয়া ক্রিকেটেও ওপেন না করা সাহসী সৌরভ নিজের কেরিয়ার বাজী রেখে ইনিংস শুরু করতে রাজি হয়ে যান । দ্রাবিড় এর ওয়ানডে কেরিয়ার বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন উইকেট কিপার হিসাবে খাড়া করে দিয়ে । শেহবাগকে বলেছিলেন 25 টা ম্যাচএ শূন্য করলেও 26 নম্বর ম্যাচটা তুই খেলবি , যতক্ষন আমি অধিনায়ক হিসাবে আছি । তখন দীনেশ কার্তিক নির্বাচক দের অটোমেটিক চয়েস হওয়া সত্বেও ধোনিকে সুযোগ দিয়েছিলেন।ধোনি পরপর ব্যর্থ হতে থাকলেও দাদার ক্রিকেট মস্তিষ্ক এ ছেলের সামর্থ্য বুঝেছিলেন, ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে তুলে এনেছিলেন । বাকিটা ইতিহাস ।

মাত্র 5 বছরের অধিনায়কত্বেই ভারতীয় ক্রিকেট কে অন্য উচ্চতায় পৌছে দিয়েছিলেন ।অধিনায়কত্বের এক নতুন সংঞ্জা দিয়েছিলেন ।বুঝিয়েছিলেন দিনের শেষে ক্রিকেট টা এগারো জনের খেলা । তখনকার অস্ট্রেলিয়া টিমের সাথে চোখে চোখ রেখে লড়েছিলেন ।স্টিভ ওয়াকে মাঠে অপেক্ষা করিয়ে দেখিয়েছিলেন ঔদ্ধত্ব শুধু অস্ট্রেলিয়াই দেখাতে পারেনা । পাকিস্তানের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ,অসিদের মাঠে অসিদের বিরুদ্ধে টেস্ট জিতেছিলেন ।বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন আমরাও পারি বিদেশের মাটিতে টেস্ট জিততে । আর বাতানুবাদগুলো ?? দাদার চরম শত্রুও জানে ।

2002 এ লর্ডস এর কথা সবার জানা । যে ইংরেজরা 190 বছর ভারতকে পদানত করে রেখেছিল তাদের ঐতিহ্যবাহী মাঠে জামা উড়িয়ে যতটা না ফ্লিনটফের শোধ নিয়েছিলেন বোধহয় তার থেকেও বেশী করে দেখিয়েছিলেন আমরাও তোমাদের উপর রাজ করতে পারি ,হোক না সেটা ক্রিকেট ।

2006 এর শেষদিকে সৌরভের কামব্যাক যখন নিশ্চিত । তখন তিনি মনে করলেই দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রিনটপে গিয়ে স্টেইন , মরকেল, এনতিনিদের মুখোমুখি না হয়ে, এরচেয়ে অনেক দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিরুদ্ধে সহজ কামব্যাক করতে পারত। সে সময় তিনি বলেছিলেন - " এইভাবে কাপুরুষের মতো ক্রিকেট কেন কোন খেলাই হয় না , এইভাবে বাচঁতে শিখিনি , যার সত্যিকারের ক্ষমতা আছে সে স্থান আর প্রতিপক্ষ বিচার করে না । যদি ক্ষমতা থাকে তো ওখানেই কিছু করে দেখাবো । " দেখিয়েছিলেন এভাবেও ফিরে আসা যায় । 2008 এ হঠাৎ করে অবসর ঘোষণার পরে সৌরভ প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন - " আজ রাত্রে নিশ্চিন্তে ঘুমাবো "।

99 এর পর 2019,কোথাও যেনো সেই একই কালো ছায়ার প্রভাব দেখা দিলো ভারতীয় ক্রিকেটে।বিশ্বকাপ থেকে বিদায়, টিমের মধ্যে অন্তর্কলহ,স্নেহভাজন দের টীমে সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো অধিনায়ক,নির্বাচকদের বিরুদ্ধে।বিশ্বকাপ পরবর্তী ভারতীয় ক্রিকেট আবার এক খারাপ সময়ের মুখোমুখি।ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন 99 সালের সেই যুবক,যিনি এখন ক্রিকেট প্রশাসনের একজন অন্যতম ক্ষুরধার ব্যাক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন।আবার নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিলেন,এবার বোর্ড প্রেসিডেন্টের ভূমিকায়।শুরু হলো নতুন আর এক অধ্যায়ের।

তাই শুধু ক্রিকেটার বা অধিনায়ক হিসেবেই নয় অবসরের 9 বছর পরেও বাংলা ক্রিকেটকে , ভারতীয় ক্রিকেটকে এখনও কিছু না কিছু দিয়ে চলেছেন ।যে মানুষটা একসময় কোচের সঙ্গে দ্বন্দের কারণে টিম থেকে বাদ পড়েছিলেন বীরেন রায় রোডের সেই লোকটাই আজ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার প্রেসিডেন্ট । হাজার অবমাননার পরেও এই দিনগুলোর জন্যই হয়তো অপেক্ষা করা ।

কারোর কাছে মাথা নত না করা বা হেরে না যাওয়া টা যে ওনার রক্তে সেটার প্রমাণ এখনও কমেন্ট্রি বক্সে পাওয়া যায় ।

কিন্ত কিছু আঁতেলমার্কা পাবলিক ,তাদের বেশীরভাগটাই বাঙালী ,তারা সৌরভের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে কারণ সৌরভ বিশ্বকাপ জিততে পারেনি ।

ফিক্সিং এ জড়িত একটা টিম ,টিমে বেশীরভাগ ই সব নতুন মুখ ,তাদেরকে নিয়ে

টেস্টে 8 নম্বরে থাকা একটা টিমকে 2 এ নিয়ে এসেছে।

যে টিমটা 29 বছরে বিদেশে 12 টা টেস্ট জিতেছে সেই টিমকে মাত্র 5 বছরে বিদেশে 11 টা টেস্ট জিতিয়েছে।
(এর থেকেও ভালো টিম নিয়ে বাকিরা টেস্টে কী করেছে সেটা সবার জানা)

একমাত্র ক্যাপ্টেন যার নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দল পাকিস্তানে গিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজ জিতেছে।

5 বছরে 4 টে আই সি সি টুর্নামেন্টের 3 টে তে টিমকে ফাইনাল এ তুলেছে ।

20 বছর পর একটা টিম বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছে ।

ক্লাইভ লয়েডের পর একমাত্র ক্যাপ্টেন যে পরপর তিনটে আই সি সি ইভেন্ট এর ফাইনাল এ খেলেছে ।

যে 5 জন ব্যাটসম্যান এর ODI এ 10000 রান আছে তাদের মধ্যে একজন ।

একদিনের ক্রিকেট এ পরপর 4 টে ম্যাচে ম্যান অফ দা ম্যাচ ।

টেস্টে গাঙ্গুলী শতরান করেছে এমন কোনও ম্যাচ ভারত কখনো হারেনি ।

টেস্ট ক্রিকেট এর গড় কখনো 40 এর নীচে নামেনি ।

একদিনের ম্যাচে বিদেশের মাটিতে সবচেয়ে বেশী শতরান (12)

এতো আকাশছোঁয়া সাফল্য নিয়ে,ক্রিকেট জীবনের শেষের দিকে ফর্মে থেকেও অবসরের পথে পা বাড়িয়েছিলেন।কারণ মানুষটা কোনোদিন মাথানত করতে শেখেনি। বীরের মতো প্রস্থান করেছিলেন।

ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের কাছে পরপর দুটো দিন ,
7 জুলাই ভারতের সবচেয়ে সফলতম অধিনায়কের জন্মদিন ।
8 জুলাই ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়কের জন্মদিন ।

স্টিভ ওয়া সৌরভ গাঙ্গুলির ব্যক্তিত্বকে যথার্থই বুঝেছিলেন,তাই হয়তো বলেছিলেন -"You don't have to like or dislike him. You have to respect him!"

#মহারাজা_তোমারে_সেলাম /_\ /_\
#advance_happy_birthday_dada
#ganguly_turns_48....#Repost

Partha Pratim Likel