দ্বিতীয় অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, এই বুদ্ধি তোমার জন্য জ্ঞানমার্গের বিষয়ে বলা হয়েছে। সেই বুদ্ধি কি? এই যে যুদ্ধ কর। এই যুদ্ধে বিজয়ী হলে মহামহিম স্থিতি এবং পরাজয় হলে দেবত্বলাভ হবে। জয়লাভ করলে সর্বস্ব এবং পরাজয় হলে দেবত্ব, কিছু লাভ হবেই। অতএব এই দৃষ্টিতে লাভ-লোকসান দুটিতেই কিছু না কিছু লাভ হবে। কিঞ্চিন্মাত্র ক্ষতি নেই। পুনরায় বললেন-- এখন তুমি নিষ্কাম কর্মযোগের বিষয়ে শোন, যে বুদ্ধির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তুমি কর্মবন্ধন থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে যাবে। পুনরায় এই কর্মের বিশেষত্বের উপর আলোকপাত করলেন। কর্ম করবার সময় সাবধান হতে বললেন এবং ফলের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে বললেন। কামনাশূণ্য হয়ে কর্মে প্রবৃত্ত হতে বললেন, বললেন কর্ম করবার সময় অশ্রদ্ধাও যেন না হয়, তাহলেই তুমি কর্মবন্ধন থেকে মুক্ত হবে। মুক্ত হবে ঠিকই কিন্তু সে বিষয়ে তোমার অবস্থান সম্বন্ধে তোমার অবহিত থাকার কথা নয়।
অতএব অর্জুনের নিষ্কাম কর্মযোগ অপেক্ষা জ্ঞানমার্গীই সহজ বলে বোধ হ'ল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন-- হে জনার্দন! নিষ্কাম কর্মযোগ অপেক্ষা জ্ঞানমার্গই যদি আপনার বিচারে শ্রেষ্ঠ, তবে কেন আমাকে এই ভয়ঙ্কর কর্মে নিযুক্ত করেছেন? এই জিজ্ঞাসা স্বাভাবিক ছিল। মনে করুন আপনার সম্মুখে দুটি পথ আছে, দুটিই একই স্থানে নিয়ে যায়। এখন আপনি যদি যেত চান, তাহলে নিশ্চয় জিজ্ঞাসা করবেন উভয়ের মধ্যে সুগম কোনটি? যদি না করেন তাহলে আপনি পথিক নন। ঠিক এইভাবে অর্জুনও জিজ্ঞাসা করলেন- ~~~~~~~~~~~~~~~~~
।। অথ তৃতীয়োহধ্যায়।।
শত্রুবিনাশ প্রেরণা যোগ
শ্লোক সংখ্যা- *০১*
__________________________________