ARPAN PAL's Album: Wall Photos

Photo 5 of 8 in Wall Photos

আজ ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ বা মহান সঁওতাল ‘হুল’ দিবস। আজ থেকে প্রায় ১৬০ বছর আগে ১৮৫৫ সালের ৩০শে জুন সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব এই চার ভাইয়ের নেতৃত্বে সাঁওতালসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এই বিদ্রোহে প্রতিবাদী সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরবসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল প্রাণ বিসর্জন দেন। ভাগলপুরে এক ভয়াবহ বন্দুক যুদ্ধে বিদ্রোহের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়ক চাঁদ ও ভৈরব নিহত হয়। ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইংরেজ বাহিনী সিদুকে ধরে ফেলে, সঙ্গে সঙ্গেই হত্যা করে। কানু বীরভূম জেলায় একদল পুলিশ কর্তৃক ধৃত হলে তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়। পরাধীন শৃঙ্খলিত ভারতবর্ষের সাঁওতাল বিদ্রোহের শ্রেষ্ঠ নায়ক সিদু, কানু এভাবেই স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে গেছে। সাঁওতাল বিদ্রোহ নিপিড়ীত মুক্তিকামী মানুষের চিরদিনের প্রেরণার উৎস। এ সংগ্রামে পরাজয় ছিল,কিন্তু আপোষ ছিল না।বিদ্রোহীরা নির্ভয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে, কিন্তু আত্মসমর্পন করেনি।

এ বিদ্রোহীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কাহিনী প্রেরণা যুগিয়েছে ভারতবর্ষের পরবর্তী সকল স্বাধীকার আন্দোলনে। ফাঁসির মঞ্চে কানুর দৃপ্ত উচ্চারণ ছিল “আমি আবার ফিরে আসব,সারা দেশে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে তুলব”,বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে ক্ষুদিরাম,মাস্টারদা সূর্যসেনদের আত্মত্যাগে।

সাঁওতাল বিদ্রোহ আমাদের প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছে, শোষণ মুক্তির সংগ্রাম কোনদিন ফুরায় না,শেষ হয়ে যায় না। মানুষ পৃথিবীতে যতদিন থাকবে, শোষণ মুক্তির সংগ্রাম চলবে ততদিন।

অধিপতিশীল জ্ঞানকাঠামোয় সিদু কানুদের আত্মত্যাগের ইতিহাস সেভাবে উচ্চারিত হয় না, তাতে কি আসে যায়,জীবন যেখানে দ্রোহের প্রতিশব্দ, মৃত্যুই সেখানে শেষ কথা নয়। সাঁওতাল বিদ্রোহের বীর শহীদদের জানাই শ্রদ্ধা ও প্রনাম ।

কৃতজ্ঞতা Dsoumen Bhowmick