Rajesh Chakraborty 's Album: Wall Photos

Photo 8 of 11 in Wall Photos

#নমস্কার #কম্রেড,#কিছু #কথা #বলার #ছিলো.......

একজন স্বনামধন্য বামনেতার গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের একটি ভিডিয়ো(লিঙ্ক কমেন্ট সেকশানে) কাল ইউটিউব স্ক্রল করতে করতে চোখে পড়ে যায়৷মনে হলো,এই ভিডিয়োটা নিয়ে কিছু কথা বলার প্রয়োজন আছে৷ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর বিরুদ্ধে ওনার কিছু অভিযোগ আছে৷যেগুলির সারবত্তা কতটা প্রথমে এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক, তারপরে দেখা যাক,অবস্থার দুর্বিপাকে সেদিনের '#যত #দোষ #নন্দ #ঘোষ' সম শ্যামাপ্রসাদের কৃতিত্বেই কেন ভাগ বসানোর চেষ্টা করছে আজকের কমিপার্টির আইটিসেল....

⭕ "শ্যামাপ্রসাদের প্রখ্যাত উক্তি,যদি ভারত ভাগ নাও হয়,তবুও বাঙ্গালাকে ভাগ করতে হবে৷"

এইরকম অর্ধসত্য-সিকিসত্য-নির্জলা মিথ্যার বেসাতিনির্মাণ আমাদের প্রিয় বাম্ভাইদের খুবই পছন্দের কাজ৷১৯৪৭ সালের ২২শে মে হিন্দু মহাসভার নেতা শ্যামাপ্রসাদ প্যাটেলের কাছে এক চিঠিতে লিখলেন ''ক্যাবিনেট মিশনে* যেরকম বলা হয়েছে সেরকম একটা শিথিল কেন্দ্রীয় সরকার হলেও বাংলায় আমাদের নিরাপত্তা থাকবে না। পাকিস্তান হোক আর নাই হোক বর্তমান বাংলাকে ভেঙ্গে আমরা দুটি প্রদেশ গড়ার দাবি করছি।”এইবার আসা যাক,ক্যাবিনেট মিশন(১৯৪৬) কিরকম সরকারের কথা বলা হয়েছিলো সেই প্রসঙ্গে৷

১৯৪৫ সালে ব্রিটেনে কনসার্ভেটিভ দল ক্ষমতাচ্যুত হয়,নতুন প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলীর নেতৃত্বে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসে৷সমসাময়িক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটলী যত শীঘ্র সম্ভব ভারতকে স্বাধীনতা দিতে উদ্যোগী হন৷বিশ্বযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি,আজাদ হিন্দ ফৌজের বিক্রম, নৌবিদ্রোহ ইত্যাদির পর ভারতশাসন করা ব্রিটিশদের পক্ষে অসম্ভব ছিলো৷সেইমত ২৪ মার্চ,১৯৪৬ সালে স্যার প্যাথিক লরেন্স,এ ভি আলেকজান্ডার, স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস ব্রিটেনের এই তিন ক্যাবিনেট মিনিষ্টারের একটি দল ভারতে আসে,যা ক্যাবিনেট মিশন নামে পরিচিত৷এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিলো স্বাধীন ভারতের একটি সংবিধানসভা এবং একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন৷ ক্যাবিনেট মিশন কংগ্রেস ও লীগের সাথে আলোচনা শুরু করে, কিন্তু লীগ নিজের পাকিস্তান দাবীতে অনড় থাকে৷কোনভাবে সহমতে আসা যাচ্ছে না দেখে, ১৬ ই মে,১৯৪৬ সালে ক্যাবিনেট মিশন নিজেদের প্রস্তাবগুলি দু পক্ষের সামনে রাখে৷ক্যাবিনেট মিশন অবিভক্ত ভারতের পক্ষে এবং সেপারেট ইলেকটোরেটের বিপক্ষে মত দিয়েছিলো৷ আসুন,বিশদে দেখা যাক৷

১.ক্যাবিনেট মিশন প্রস্তাব দিয়েছিলো,ভারতের প্রভিন্সগুলোকে তিনটে সেকশান A.B এবং C তে ভাগ করা হোক৷সেকশান A তে থাকবে বোম্বে,ইউনাইটেড প্রভিন্স,মাদ্রাজ,সেন্ট্রাল প্রভিন্স,বিহার ও উড়িষ্যা৷গ্রুপ B তে থাকবে পাঞ্জাব, বালুচিস্তান, সিন্ধ,নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স এবং সেকশান C তে থাকবে বাংলা এবং অসম৷অর্থাৎ,সেকশান B মুসলিম মেজরিটি,A হিন্দু মেজরিটি অঞ্চল এবং C তে মুসলিম মেজরিটি হওয়া সত্ত্বেও ভালোসংখ্যক হিন্দু আছে,বলা হয়েছিলো,প্রত্যেক প্রভিন্স নিজেদের সংবিধান বানাবে,তারপর প্রত্যেক প্রভিন্স মিলে নিজের সেকশানের সংবিধান বানাবে,শেষে সবকটা সেকশান মিলে দেশের সংবিধান তৈরী করবে৷প্রিন্সলি স্টেটগুলিকেও অটোনমি দেওয়া হয়৷তারা চাইলে ভারতে জুড়তে পারে বা ব্রিটেনের সাথে এগ্রিমেন্ট করতে পারে৷

২.ইউনিয়ান গর্ভনমেন্টের ক্ষমতা খুবই সীমিত হবে৷তাদের শুধু ফিনান্স, কমিউনিকেশন এবং ফরেন এফেয়ার্সের ক্ষমতা থাকবে৷বাকী নিরাপত্তা,আইনশৃঙ্খলাজনিত সব ক্ষমতা প্রভিন্সের হাতে থাকবে৷

৩.এছাড়াও এটা বলা হয় যে,পাঁচ বছর অন্তর কোন প্রভিন্স চাইলে অন্য সেকশানে ঢুকতে পারে৷অর্থাৎ,বেঙ্গল চাইলে সেকশান C ছেড়ে সেকশান B তে যেতে পারে৷শুধু তাইই নয়,দশ বছর পর কোন প্রভিন্স সেকশান বা ইউনিয়ানের সংবিধান পরিবর্তনের দাবী করতে পারে৷

৪.প্রভিন্সগুলোর এসেম্বলি থেকে সংবিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হবেন জনসংখ্যার অনুপাতে৷এই সংবিধানসভা ইন্ডিয়ান ইউনিয়ানের সংবিধান এবং অন্তর্বতীকালীন সরকার বানাবে৷

এইবার,মূল পয়েন্টে আসি৷পাকিস্তান বানানোর দাবীকে নস্যাৎ করা হলেও জিন্না এই প্ল্যান শুনে খুশি হলেন৷কারণ,জিন্নাহ এখানে তার কল্পিত পাকিস্তানের থেকেও বড়ো পাকিস্তানের সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন৷সেকশান B এবং C মুসলিম মেজরিটি অঞ্চল, পাঞ্জাব, বাঙ্গালা এরই অংশ৷এসেম্বলির মেজরিটি সদস্য মুসলিম৷তাদের হাতেই যাবতীয় সিদ্ধান্তের ভার৷ক্যাবিনেট মিশনের আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিলো যদি ভারতভাগ হয় তবে অর্ধেক বাঙ্গালা ও অর্ধেক পাঞ্জাব ভারতেই থেকে যাবে৷অতএব জিন্নাহ ভেবে নিলেন,এই পাঁচ বছর ও দশ বছরের প্রভিশানকে কাজে লাগিয়ে দুটো সেকশানকে ভারত থেকে পুরোপুরি আলাদা করা যাবে৷এই ভেবে ১০ ই জুন,১৯৪৬ এ লীগ ক্যাবিনেট মিশন প্ল্যানে সম্মতি দেয়৷কিন্তু গোল বাঁধে অন্যখানে৷ কংগ্রেস সহ অন্য দলগুলি দাবী করতে থাকে যে, প্রভিন্সগুলো এ,বি,সি কোন সেকশানে যুক্ত করবে বা আদৌ যুক্ত হবে কিনা,সেটা কম্পালসারি থাকবে না,তাদের ইচ্ছানুসারে হবে৷যেহেতু অসম ও নর্থ ওয়েস্টে কংগ্রেসের সরকার ছিলো৷অবশেষে তাই,মেনে নেওয়া হলো৷সেকশানে যুক্ত না হলে,বাঙলা ,পাঞ্জাব হাত থেকে বেরিয়ে যেতে পারে দেখে,এইবার জিন্না বেঁকে বসলেন৷প্রভিন্সের যোগদান কম্পালসারি না বানানোয় এবং ভারতভাগ হচ্ছে না দেখে, কংগ্রেস মোটামুটি মেনে নিলো৷ কিন্তু,ক্রমহ্রাসমান ব্রিটিশ শক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন ওয়াভেল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্বোধন করতে আগ্রহী ছিলেন। জিন্নাহর ভেটো উপেক্ষা করে তিনি একটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন করেন, যাতে নেহেরু অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হন৷ পাকিস্তান প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সাথে সাথে জিন্নাহ অশান্ত হয়ে ওঠেন। পাকিস্তানকে অর্জন করতে তিনি "সরাসরি পদক্ষেপ" গ্রহণ করেছিলেন, যা দাঙ্গা এবং গণহত্যার সূত্রপাত করেছিল।আগস্টের ডাইরেক্ট একশান ডে ওয়াভেলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার সংকল্পকে আরও বাড়িয়ে তোলে। 1946 সালের 2 রা সেপ্টেম্বর নেহেরুর মন্ত্রিসভা গঠিত হয়৷

২ রা মার্চ,১৯৪৭, শ্যামাপ্রসাদ মাউন্টব্যাটেনকে লেখেন,

"আমি এই চিঠিতে যে অভিমত ব্যক্ত করছি তার সঙ্গে শুধু বাংলার বৃহৎ সংখ্যক হিন্দু নয়, ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের হিন্দুরাও সহমত পোষণ করে। এবং আশা করি আপনি তা যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে পাকিস্তানের বিরােধিতা করি। আমরা শুধু হিন্দুদের মনোভাব থেকে একথা বলছি না, সর্বভারতীয় স্বার্থেই একথা বলছি। বর্তমান গণপরিষদ ব্রিটিশ ভারতের সকল প্রদেশের নয়, বেশ কিছু সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় রাজ্য প্রতিনিধিত্ব করে। সিন্ধ,পাঞ্জাব,বালুচ,নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ারের মুসলমান সদস্যগণ অবশ্য অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকছেন এবং ঐ প্রদেশগুলির হিন্দু ও শিখ সদস্যরাই তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। মুসলিম লীগের এই বাধাদানকারী মনােভাবকে কোনও মতেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। যদি সরকার সাহস সঞ্চয় করে ঘােষণা করতে পারেন যে তারা মন্ত্রী মিশন পরিকল্পনার মূল সুপারিশ থেকে কোনওমতেই পিছিয়ে আসবেন না, তাহলেই পুরাে পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যাবে। যদি আরও ঘোষণা করা হয় যে গণপরিষদ কে স্বাধীন ভারতের প্রথম সাময়িক লােকসভা বলে গণ্য করা হবে, এবং সে লােকসভা থেকে নির্বাচিত অস্থায়ী সরকারের হাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে নির্বাচিত অবশ্যই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে তা হলেই মুসলিম লীগ তাদের নেতিবাচক ও বাধাদানকারী মনােভাব পরিবর্তন করতে বাধ্য হবে এবং দেশের শাসনকার্যে নিজেদের ন্যায্য অংশ গ্রহণ করবে।ভারত ভাগ হোক বা না হোক, পাঞ্জাব ও বাংলাকে ভাগ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে৷"

অবিভক্ত ভারত,মিশনে প্রস্তাবিত শিথিল কেন্দ্রীয় সরকার,ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেকশানে যোগদান এবং বেশীরভাগ ক্ষমতা আরব সাম্রাজ্যবাদী সংখ্যাগুরু শাসকের হাতে কেন্দ্রীভুত,এই রকম পরিস্থিতি কল্পনা করুন৷শ খানেক খাগড়াগড় হয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না সহজে৷তাদের সেই ক্ষমতাই নেই৷ভারতের ফেডারেল স্ট্রাকচার নেই তখন,বরং ইউনিয়ান অফ স্টেটস৷বঙ্গের সংখ্যালঘু পৌত্তলিকের নিরাপত্তা কোথায়?

⭕ ''যখন চেষ্টা করেও ভারতভাগ আটকানো যাচ্ছে না,তখন কংগ্রেসের শরৎ বসু,জ্যোতি বসু,যোগেন মন্ডল,আবুল হাশেম স্বাধীন সার্বভৌম বাঙ্গালার(যুক্তবঙ্গ) মনোভাব তারা নিয়েছিলেন৷কিন্তু বাঙ্গালাকে ভাগ করতেই হবে,এই জেদে অনড় ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ৷এই যে এত মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে,ঘর ছেড়েছে,সব বাঙ্গালাভাগের জন্য৷বাঙ্গালাকে ভেঙে গর্ববোধ করতেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী৷''

এখানে কিছু কথা বলা আবশ্যক৷চলুন ফিরে যাওয়া যাক,১৯৪৬সালের প্রভিন্সিয়াল ইলেকশানে৷ পাকিস্তানের দাবীতে নির্বাচনে নেমে, বাঙ্গালার মুসলিম রিজার্ভ 119 টি সিটের মধ্যে লিগ পায় 114 টি সিট সাথে 83% এর উপর মুসলিম ভোট৷ এরপরই,১৬ ই আগষ্ট ডাইরেক্ট একশান ডে র নরসংহারের দিন৷'#লড়কে #লেঙ্গে' পাকিস্তানের দাবী '#মারকে #লেঙ্গে' পাকিস্তানে পর্যবসিত,কলকাতার ধুলোমাখা রাজপথ ধুয়ে গেছে কাফেরের রক্তধারায়,সুরাবর্দি-নাজিমুদ্দিনের প্ররোচনায়,'মুসলিম জানে ডাইরেক্ট একশান কি,আমরা মোটেই অহিংস নই' পবিত্র মাসে কাফের নিধনে মেতেছে ইমানী দুধেল গোরুর দল৷চার দিনে প্রায় দশহাজার মানুষের মৃত্যু দেখেছিলো এই '#সিটি #অফ #জয়' কলকাতা মহানগরী৷রুখে দাঁড়িয়েছিলেন #গোপাল #মুখার্জী,যুগল ঘোষ, কালু, শ্যামাপ্রসাদ সহ ব্যায়াম সমিতি,আখড়ার হিন্দু শিখ যুবরা৷ তারপর,১০ ই অক্টোবর,১৯৪৬ কোজাগরী লক্ষীপুজোর দিন কাশেম-গোলাম সরোওয়ার হুসেইনির 'মিঞার ফৌজ' খ্যাপা কুকুরের মত তছনছ করে দেয় 18% হিন্দুর জীবন যৌবন ধনমান৷বোঝা গেলো,দেশভাগ আসন্ন৷প্রয়োজনে ভারতবর্ষকে রক্তস্নাত করে পাকিস্তানের মসনদে বসবেন কায়েদ এ আজম মহম্মদ আলি জিন্নাহ৷বাঙ্গালায় তখন আরব সাম্রাজ্যবাদীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাজিত হলে দুধেল সংখ্যাগরিষ্ঠের বাঙ্গালা পাকিস্তানেই যাবে৷কিন্তু তা হতে দিলেন না এ সি চ্যাটার্জী,নলিনাক্ষ স্যান্যাল, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী,যাদব পাঁজা,সুবোধ চন্দ্র মিত্র,শৈলেন্দ্র কুমার ঘোষ প্রমুখ৷১৯৪৬ সালের শেষের দিকে গড়ে উঠলো বেঙ্গল পার্টিশান লিগ৷হিন্দু বাঙ্গালী হোমল্যান্ডের দাবীতে,এগিয়ে এলেন রমেশচন্দ্র মজুমদার,যদুনাথ সরকার,মেঘনাদ সাহা,সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মত নমস্য শিক্ষাবিদ৷ অবস্থা বেগতিক বুঝে তড়িঘড়ি শরৎ বোস-সুরাবর্দি-আবুল হাসেম-কিরণ শঙ্কর রায় গভর্নর বারোজের সহায়তায় স্বাধীন সার্বভৌম যুক্তবঙ্গের প্রস্তাব পেশ করলেন৷জিন্না প্রথমে অরাজী হলেও পরে বুঝলেন স্বাধীন বাঙ্গালা আদতে 'Virtual Pakistan',অতএব রাজী হলেন৷তো,কিভাবে বুঝলেন এ কথা?খুবই সহজ,ডেমোগ্রাফি বিচারে সেই ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বঙ্গের আঠাশটির সতেরোটি জেলায় বিশেষ সম্প্রদায় ক্রুড মেজরিটি৷ চট্টগ্রাম (74.55%), নোয়াখালী (81.35%), কুমিল্লা(77.09%), বরিশাল (72.33%), ময়মনসিংহ (77.44%), ফরিদপুর (64.78%), ঢাকা(67.29%), মালদা(56.79%), রংপুর( 71.41%), বগুড়া(83.93%) , পাবনা (77.06%), খুলনা(49.36%), যশোর (60.21%), নদীয়া (61.29%), দিনাজপুর (50.20%), রাজশাহী (74.65%),মুর্শিদাবাদ(56.55%) গড়ে 54.73% শান্তিরদূত৷ অতএব,স্বাধীন সার্বভৌম বাঙ্গালা যে আদতে পাকিস্তানে সংযুক্তির ইন্টারমিডিয়েট স্টেজ সন্দেহ নেই৷শাসনতন্ত্রে মেজরিটিই শেষ কথা বলে৷ ডিসেম্বরে সামান্য বাস ট্রেন পুড়তে দেখলেই ভারত সরকার কেন আর্মি নামাচ্ছে না, বলে চিলচিৎকার শুরু হয়,পৃথক সার্বভৌম যুক্তবঙ্গে সংখ্যালঘু কাফেরকে পুড়তে দেখলে কোন আর্মি বাঁচাতে আসত?#গ্রেট #ক্যালকাটা #কিলিংয়ের সময় কিরণশঙ্কর-শরৎ-জ্যোতিরা হায়েনাদের হাত থেকে কাফেরদের বাঁচাতে রাস্তায় নেমেছিলো?হেঁ হেঁ,ঘোড়ায় হাসবে কর্ত্তা৷বরং,কষাই সুরাবর্দির বিরুদ্ধে বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনীত হলে তা সমর্থন করতে সাহস পাননি,#জ্যোতি #বসু, রতনলাল ব্রহ্ম এবং রুপনারায়ণ রায়,এই তিন কমিউনিষ্ট সদস্য৷

স্বাধীন বাঙ্গালার অসাধু পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ২ রা মে,১৯৪৭ ওই একই পত্রে শ্যামাপ্রসাদ মাউন্টব্যাটেনকে লিখছেন,

''স্বাধীন অবিভক্ত বাংলা নিয়ে কিছু সস্তা কথাবার্তা চলছে। আমরা এর তাৎপর্য একেবারেই অনুধাবন করতে পারছি না; কিংবা এ প্রস্তাব কোনোভাবেই সমর্থন করতে পারছি না। এই প্রস্তাবে হিন্দুদের কোনও প্রকার উপকারের সম্ভাবনা নেই। সার্বভৌম বাংলার সংবিধান কারা রচনা করবে? অবশ্যই একাজ সংখ্যাগুরু মুসলিম লীগারদের হাতেই অর্পণ করা হবে। তারা পৃথক জাতি তত্ত্বের প্রবক্তা রূপে ধর্মান্ধ মনোভাবেই পরিচালিত হবে। আমরা তাদের হাতে আমাদের ভাগ্য সমর্পণ করতে রাজী নই। অধিকন্তু আমরা কোনও মতেই ভারতের অবশিষ্টাংশ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নিতেও রাজী নই। এই প্রশ্নে কোনও সমঝােতা, সালিশী বা বিবেচনা করতে আমরা প্রস্তুত নই।"

#এটাই #সারসত্য৷যারা পাকিস্তানের দাবীতে কলকাতা,নোয়াখালী প্রকাশ্যে হিন্দু নিধনে নেমেছিলো কয়েক মাস আগে,পুনরায় তাদেরই জিম্মায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ছেড়ে দেওয়ার নামান্তর এই স্বাধীন সার্বভৌম বাঙ্গালা৷ ভারতের অবশিষ্টাংশ থেকে হিন্দু বাঙ্গালী পৃথক হবে কেন?দক্ষিণেশ্বর, বেলুড়, তারাপীঠ,রমনার পাশাপাশি অযোধ্যা,কাশী মথুরা, বৈষ্ণুদেবী, রামেশ্বরম,তিরুপতিও আমাদের অস্তিত্বের অংশ৷যারা আমাদের পৌত্তোলিক নির্যাসটুকুকে নিঃশেষ করে দিতে চায়,তাদের সাথে স্বাধীন বাঙ্গালা(Virtual Pakistan) এ থাকার জন্য নিজেদের সনাতনভুমির ঐতিহ্য ত্যাগ,কতটা সুখদায়ক হতে পারে? 'সাম্রাজ্যবাদী দিল্লি' র অধীনে থেকেও দক্ষিণেশ্বরের মায়ের মন্দির স্বমহিমায় আছে, তথাকথিত বাঙ্গালী ভাইজানরা কিন্তু রমনা কালিমন্দিরের অস্তিত্ব ধুলিসাৎ করে দিয়েছে৷

আরো হাস্যকর দাবী হলো,বাস্তুহারাদের দুর্গতির মূলে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়৷উনি নাকি এই অসহায় উদ্বাস্তুদের দেখে গর্ববোধ করতেন!যে মানুষটি ক্যালকাটা কিলিংয়ের পরও বিধানসভায় হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে প্রত্যেক হতাহতের জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেন,এবং তারপর,ঘটনাক্রম দেখে দেশভাগ অবশম্ভ্যবী বুঝেই স্বজাতি স্বার্থরক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন, এক টুকরো জমির অধিকার দিয়ে গেলেন,তিনিই নাকি ভূমিচ্যুতদের অবস্থা দেখে গর্ববোধ করতেন!কত #জ্ঞানপাপীর #বাস #মাগো,#তোমার ভুবনে.....

এবার কিছু প্রশ্ন আমি রেখে যাচ্ছি......