Dibyendu Dalal's Album: Wall Photos

Photo 1 of 1 in Wall Photos

হিন্দুরাষ্ট্রের পথপ্রদর্শক হিন্দু বীর শিবাজী মহারাজের জীবন কাহিনী :


১৬৩০ খ্রীষ্টাব্দের ১৯শে ফেব্রুয়ারী মহারাষ্ট্রের পুণের নিকট একটি পার্বত্য দুর্গে জন্ম হয় ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের | শিবাজীর পিতার নাম শাহজী ভোঁসলে ও মাতার নাম জীজাবাঈ | সে সময় ভারতবর্ষে পরপর সুলতানী ও মুঘল সাম্রাজ্য চলছিল | ভারতীয় সংস্কৃতি ও হিন্দুত্ব সংস্কৃতি হয়ে পড়েছিল বিপন্ন | ঔরঙ্গজেবের অসহিষ্ণুতার ফলে ধ্বংস হচ্ছিল একের পর এক হিন্দু মন্দির | এমন এক কালখণ্ডে জন্মগ্রহণ করেন বীর শিবাজী | বাল্যকালে মা জীজাবাঈয়ের মুখে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণের গল্প শুনে বড় হন শিবাজী | ফলে তাঁর মধ্যে ভারতীয় সাংস্কৃতিক ভাবধারার প্রতি আকর্ষণ জাগ্রত হয় | মুঘল শাসনমুক্ত ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখতেন শিবাজী | বাল্যকালেই উপজাতিদের নিয়ে একটি সেনাদল গঠন করেন, এরা মুঘল শিবিরে হানা দিয়ে নিরীহ বন্দী এবং দেশীয় সম্পত্তি উদ্ধার করতো | যৌবনে পদার্পণ করে এই উদ্যোগকে আরো বৃদ্ধি করেন | একের পর এক সাফল্য পেতে থাকেন | এই অবস্থায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে ব্রহ্মচারী সাধক রামদাসের | ব্রহ্মচারী সাধক সমর্থ রামদাসকে তাঁর গুরু রূপে মেনে নেন | স্বামী রামদাস শিবাজীর মধ্যে উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব খুঁজে পেয়ে তাঁকে মুঘল শাসন থেকে ভারতীয় সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারের জন্য অনুপ্রাণিত করেন | শিবাজী মহারাজ গুরুর প্রদর্শিত পথে এগিয়ে চলে সাফল্য লাভ করেন | ১৬৭৪ সালে রায়গড়ে "ছত্রপতি" উপাধি গ্রহণ করে রাজা হন | মারাঠা ভাষায় "ছত্রপতি" শব্দের অর্থ হল ক্ষেত্র বা অঞ্চলের অধিপতি | তিনি নারীদের স্বাধীনতা অর্জন তথা নারীবাহিনীকে যুদ্ধে আনয়ন, হিন্দু ধর্ম তথা ভারতীয় সংস্কৃতির পুনঃস্থাপন, দাসপ্রথা নিবারণ এবং হিন্দুদের বলপূর্বক ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ইত্যাদি নিয়ে সংগ্রাম করে সাফল্য অর্জন করেছিলেন | তাই প্রকৃত অর্থেই তিনি হয়েছিলেন ভারতের "ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ" |


শিবাজী ভোঁসলে বা "ছত্রপতি" শিবাজী মহারাজ ছিলেন মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রবর্তক। ১৬৭৪ সালে মারাঠা সাম্রাজ্যের রাজা "ছত্রপতি" হিসেবে তিনি মুকুট ধারণ করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় রাজা যিনি ৭০০ জাহাজ সম্বলিত একটি আধুনিক নৌবহর গড়ে তোলেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন, মুঘলদের সিংহাসনচ্যুত করতে আধুনিক নৌবহর কতটা জরুরি। তাই শিবাজীকে বলা হয় ভারতীয় নৌবাহিনীর জনক। অকুতোভয় এই বীর যোদ্ধার সম্পর্কে কয়েকটি অজানা তথ্য-


১. ১৬৪৫ সালে যখন তোরণগড় দুর্গ দখল করেন, শিবাজির বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর।


২. উত্তরাধিকার সূত্রে মাত্র ২০০০ সেনা পেয়েছিলেন পিতা শাহজীর কাছ থেকে। কিন্তু আগামী কয়েক বছরে তাঁর নেতৃত্বের গুণে আকৃষ্ট হয়ে তাঁর বাহিনীতে ১০ হাজারেরও বেশি সেনা যোগ দেন।


৩. শিবাজী একজন সুদক্ষ কূটনীতিবিদ ও গেরিলা-যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ ছিলেন।


৪. শিবাজীর নেতৃত্বে মারাঠা সাম্রাজ্য তৎকালীন ভারতের অন্যতম শক্তিশালী সাম্রাজ্য হয়ে ওঠে। মুঘলদের কাছে আতঙ্কের আরেক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘শিবাজী’।


৫. শিবাজী ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ হিন্দু, কিন্তু তিনি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদেরও প্রাপ্য সম্মান দিতেন।


আজ ৪ঠা জুন শিবাজী মহারাজের রাজ্যাভিষেকের বর্ষপূর্তির সেই পুণ্যলগ্নে ভারতমাতার বীর সন্তানের চরণে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম | জয় ভবানী, জয় শিবাজী |