rajib chakraborty's Album: Wall Photos

Photo 34 of 340 in Wall Photos

তরাইনের প্রথম যুদ্ধে ১১৯১তে মহম্মদ ঘোরী পরাজিত হয়েছিলেন শুধু নয়, বন্দী হয়েও পৃথ্বীরাজের দয়ায় কোনরকমে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলেন। অথচ পরাজিত শত্রুকে পৃথ্বীরাজ তাড়া করে তৎকালীন তাঁর রাজ্যসীমা পার করে দিয়ে আসেন নি, যা ছিল বর্তমান ভারত পাক সীমান্ত পর্যন্ত। মুসলিম শাসন শুরু হত বর্তমান লাহোর থেকে। অথচ এটুকু ক্ষত্রিয় রাজা হিসাবে ছিল তাঁর ন্যূনতম কর্তব্য। নিজের প্রজাদের সুরক্ষা সম্পর্কে সামান্যতম উদ্বেগহীন রাজার মূর্খতার সুযোগ নিয়ে ঘোরী তাঁর পলায়মান বাহিনীর ৩০০ জেহাদী সৈনিককে বর্তমান ভারতের ভাতিন্ডায় যা সেসময় পৃথ্বীরাজের রাজ্যভুক্ত ছিল সেখানে রেখে যান। পরবর্তী ১৩ মাস ধরে এই ৩০০ সন্ত্রাসী সমগ্র পূর্ব পাঞ্জাবে হিন্দুদের ওপর গণহত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ ও অত্যাচার নির্বিচারে চালিয়ে যায়, অথচ পৃথ্বীরাজ এদের দমন করতে কোন ব্যবস্থা নেন নি। পূর্ব পাঞ্জাব কিন্তু তখন নিয়ম অনুযায়ী পৃথ্বীরাজের রাজ্যাংশ!
১১৯২ তে মহম্মদ ঘোরী নতুন করে সৈন্য সংগ্রহ করে প্রচুর সময় নিয়ে প্রস্তুত হয়ে আসেন। আর পৃথ্বীরাজ এই সময়টা সুন্দরী স্ত্রী সংযোগীতার সঙ্গে রাজকীয় আরামে কাটিয়েছিলেন। কোনরকম যুদ্ধ প্রস্তুতি পর্যন্ত করেন নি। মাত্র ৩০০ সন্ত্রাসীর দ্বারা সমগ্র পাঞ্জাব ১৩ মাস ধরে তছনছ করে ঘোরী যখন দ্বিতীয়বার তরাইনে ফিরে এলেন, তখন বিলাসপ্রিয় যুদ্ধবিমুখ পৃথ্বীরাজ তাঁর কাছে শান্তির দূত পাঠিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ১৩ মাস আগের যুদ্ধে পৃথ্বীরাজের বিক্রম ঘোরী দেখেছেন। তাই তাঁকে পৃথ্বীরাজ সুযোগ দিচ্ছেন সন্ধি করে নিরাপদে ফিরে যাওয়ার।
ঘোরী বললেন যে তিনি সেনাপ্রধান মাত্র, আসলে সুলতান তাঁর ভাই। তাই তিনি সন্ধি করতে অপারগ, তবে তিনি তাঁর ভাইয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। পৃথ্বীরাজ যেন উত্তর আসা অবধি অপেক্ষা করেন।
পৃথ্বীরাজ পরদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজী হলেন। তারপর সেইদিন শেষরাতে জেহাদী বাহিনী সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত হিন্দুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। পৃথ্বীরাজ চৌহান ও তাঁর বাহিনী বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। তারা পরাজিত হল ইসলামিক শঠতার কাছে যার নাম আল তাকিয়া। জেহাদী বাহিনী সামনে গরুর পাল নিয়ে, হাতে গোমাংস নিয়ে যুদ্ধ করতে এগিয়ে এল। লক্ষ সেনা অস্ত্র ত্যাগ করে পিতামহ ভীষ্ম এর মত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মৃত্যু বরণ করল। পৃথ্বীরাজ হলেন বন্দী। আর পৃথ্বীরাজের প্রাণের ভয় দেখিয়ে সংযোগীতাকে জহর ব্রত পালন করা থেকে বিরত করা হল। সূফী সন্ত চিশতী সংযোগীতাকে বিবস্ত্র করে সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে সমর্পণ করলেন যখন তারা দিল্লীতে রক্তের নদী বইয়ে দেওয়ার পর আজমীরে এল।

Debal Dev Basu