samir ghatak's Album: Wall Photos

Photo 1 of 1 in Wall Photos

✊✊ #কেরালা ছিঃ

কেরালার যে রূপটা আপনারা দেখছেন সেটা তার মাত্র ১%। একদমই ঠিক পড়ছেন মাত্র ১%। আপনারা বলতেই পারেন পশুদের ওপর নৃশংসতার দিক থেকে কেরালা এবং চিন, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ইত্যাদির মধ্যে খুব বেশি তফাৎ নেই৷ চিনের উপমা টানলাম। কারণ চিনই একমাত্র দেশ যার সংবিধানে পশুদের নিয়ে কোনো ধারা উল্লেখিত নয়৷ এটা প্রথম ঘটনাও নয় যেখানে ওরা কোনো প্রাণীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। একেবারেই নয়৷ বরং এটা কম নৃশংস। ২০১০ এ যখন ভারতে ইন্টারনেট এতটা রমরমিয়ে আসে নি, ঘরে ঘরে যখন স্মার্টফোন ছিল না, তখন কেরালায় এক সাংঘাতিক নৃশংসতা ঘটে। দুটো জ্যান্ত হাতির গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। ধরা পড়ার পর সেই গ্রামবাসীরা জানায় হাতিগুলো এসে তাদের ফসল না খেলেও সারাগ্রামে খেলে বেরাত। যা দেখে তাদের ভয় লাগত। তাই তারা কেরোসিন স্প্রে করে হাতিদের গায়ে মশাল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। হাতিগুলো বোধ হয় বাঁচার জন্যে চিৎকার করেছিল। কিন্তু তারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিল। তৎকালীন বনাধিকারিক ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। কারণ উনি ওনার ২৪ বছরের চাকরী জীবনে এতখানি নৃশংসতা দেখেন নি কখনও।

ঠিক এই ঘটনার ২ বছর পরে ২০১২ সালে কেরালায় একটি বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীর মাংসের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। প্রাণীটা মার্মোসেট বানর। মার্মোসেট বানরকে বাঁচানোর জন্যেই Silent valley movement হয়েছিল। সরকারের বাঁধা নিষেধ থাকা সত্ত্বেও মার্মোসেট বানর বিক্রি হচ্ছিল কেরালার বাজারে। পরে অবশ্য অনেক ধড়পাকড় করে বন্ধ করা হয়।

সাল, ২০১৩, কেরালায় বিষ দিয়ে ৫৬ টি কুকুরকে মারা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয় শহরে নাকি দেদারে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল।

সাল, ২০১৪, এবার কুকুরের সংখ্যাটা বেড়ে দাড়ায় ৬০- এ। কারণটাও একই দেখানো হয়৷

সাল ২০১৫, এবার শুরু হয় বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপ বিক্রি। এই কচ্ছপগুলো সাধারণ কচ্ছপের তুলনায় আকারে ছোট এবং স্বাদ ভীষণ। ফলে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে থাকে সেখানে। পরে সেটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়ে বন্ধ করা হয়।

এরপর ২০১৭, ১৮ র কেস আমরা সবাই জানি। নির্বিচারে কুকুর মারা হয়েছিল সেখানে। কিন্তু সেখানকার সরকার নিরুত্তাপ।

কেরালার তীব্র সত্যি হল ওখানকার খাদ্যাভাস। বাড়ির দেওয়ালে ঘুরে বেরানো টিকটিকি থেকে শুরু করে বাচ্চা হাঙর সবই তাদের খাদ্যাভাসে আছে। ওখানেও মালেশিয়ার মত গেছো পিপড়ে ভাজা খাওয়া হয়৷ খরগোশের মাংসও প্যাকেট জাত হয়ে বিক্রি হয়৷ আমি খুব অবাক হব না যদি শুনি কেরালাতেও চিন ও কোরিয়ার মত ইউলিন উৎসব পালিত হচ্ছে। ৯৪% শিক্ষার হার যুক্ত কেরালায় পশু প্রেমী শব্দটা কেবলমাত্র খিল্লি। ওরা পশুপ্রেমী শুনলে ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে তাকায়। ওখানে কেউ কুকুরকে বিস্কিট খাওয়ালে তারা তাকে ব্যঙ্গ করে। কারণ কুকুর আর মশা তাদের কাছে এক। আজকে আমাদের হাতে ইন্টারনেট আছে বলে এই অসহায় ভাবে মৃতা মায়ের ঘটনা আমাদের সামনে এসেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি এসব। আমরা জানতে পারছি কিভাবে খাবার দেওয়ায় ছলনায় তাকে ঠেলে দেওয়া হল মৃত্যুর দিকে। আমরা কাঁদছি মা ও তার বাচ্চার জন্যে। আমরা কাঁদছি ফরেস্ট অফিসারের বিবৃতি শুনে। সারা দেশ কাঁদছে। কিন্তু আরেকটা বড় সত্যি হলে কেরালায় অনেক ফরেস্ট অফিসারের পোস্টিং হলেও তিনি যেতে চান না। কারণ নৃশংসতা সহ্য করা সম্ভব নয়৷ কেরালার আরো বড় সত্যি হল চোরাচালান। হাতি, তক্ষক ইত্যাদি পশুদের চামড়া, দাঁত হাড়ের লোভে এরা দেদারে এদের মেরে বাইরে চালান করে উপার্জন করে। ৯৪% শিক্ষিতের রাজ্যের সত্যতা ভয়ানক। ছেড়ে দিন। তবে শুধু সেই দিনটার অপেক্ষায় আছি যেদিন ন্যাশনাল মিডিয়ারা কেরালার এই বাস্তবতাগুলোও তুলে ধরবে সবার সামনে। অপেক্ষায় আছি সেই দিনটার যেদিন সারা ভারতে পশুপ্রেম কোনো খিল্লি বা বিদ্রুপ বা কটাক্ষের কারণ হবে না। অপেক্ষায় আছি যেদিন সবাই বুঝবে ভারতে একটা সময় সমস্ত ধর্মের লোক মিলে "পশুপতি" শিবের পূজো করত। যার অর্থ পশু প্রেম। সেই দিনগুলোর অপেক্ষায় আছি। এতটা নৃশংসতা নেওয়া সম্ভব না।
# Copied